রেমিট্যান্স এবং রেমিটার; আমার সামান্য ভাবনা

রেমিট্যান্স আমাদের দেশের অর্থনীতির প্রাণ। দেশের অর্থনীতি টিকিয়ে রাখার লাইফলাইন হলো রেমিট্যান্স। আর সেই রেমিট্যান্স আহরণে আমার প্রিয় প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ব্যাংক, বর্তমান এমডি স্যারের নেতৃত্বে ঈর্ষণীয় ভূমিকা পালন করছে। সরকার নানান উদ্যোগ এবং প্রণোদনা দিচ্ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে এবং বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স আনতে। কিন্তু প্রণোদনা দিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ সাময়িক বাড়লেও হুন্ডি রেট প্রণোদনার চেয়েও বেশি তাই এখনো প্রচুর রেমিট্যান্স হুন্ডির মাধ্যমে আসছে। হুন্ডি লেনদেন না করতে এবং হুন্ডির বাজে প্রভাব নিয়ে মানুষকে বুঝিয়ে বুঝিয়ে আমরা ক্লান্ত প্রায়। অনেকবার চিহ্নিত হুন্ডি কারবারিদের হুমকিও পেয়েছি কাউন্টারে হুন্ডির টাকা জমা না নেওয়ায়।

একজন ব্যাংকার এবং রেমিট্যান্স ডেক্সে দীর্ঘদিন কাজ করার কারণে রেমিটারদের কিছু মনের কথা জানতে পেরেছি। সরকার প্রণোদনা আরও দিলেও তেমন কাজ হবে না কারণ হুন্ডি ব্যবসায়ীরা তারচেয়েও আরও বেশি লাভ দিবে, সুযোগ দিবে। আমরা মানুষ মাত্রই ভবিষ্যৎ নিয়ে ভীতু। যদি রেমিটারদের ভবিষ্যৎ সিকিউরিটি সরকার দিতে পারে তবে হুন্ডি প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। যেমন- আমরা যারা সরকারি ব্যাংকে চাকুরী করি তাদের বেতন-ভাতা প্রাইভেট ব্যাংকারদের থেকে অনেক কম তারপরেও সরকারি চাকুরির জন্য এত লাইন কেন! কারণ ভবিষ্যৎ সিকিউরিটি। পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, সামাজিক মর্যাদা এই সবের জন্য আমরা প্রাইভেট ব্যাংকের তুলনায় বর্তমান লাভটা ছাড় দিচ্ছি ভবিষ্যতের জন্য।

ঠিক তেমনি সরকার যদি রেমিটারদের প্রেরিত অর্থের উপর ভিত্তি করে পেনশন ভাতা/বিশেষ ভাতা চালু করে তবে একজন রেমিটার ভবিষ্যৎ সিকিউরিটির কথা চিন্তা করে হুন্ডি লেনদেন করবে না। যেমনঃ সরকার যদি একটা কাঠামো দিয়ে দেয় যে, একজন রেমিটার যত বেশি রেমিট্যান্স বৈধ পথে দেশে পাঠাবে তার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে সে দেশে চলে আসলে তত বেশি পেনশন ভাতা সে পাবে; কত বছর পর্যন্ত সেই রেমিট্যান্স আসতে হবে, পরিমাণ কি হবে, ইত্যাদি ইত্যাদি। দেশের স্বার্থে সরকার কত ধরণের ভাতা ও পেনশন দিয়ে থাকে।

আমার দেশের অর্থনীতির প্রাণ প্রবাসী ভাইদের জন্য ভবিষ্যৎ পেনশন/বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করলে ওনারা সম্মানিত হবেন, ভবিষ্যৎ সিকিউরিটি পাবেন, দেশের প্রতি ভালোবাসা বাড়বে, হুন্ডি বন্ধ হবে, বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রচুর বাড়বে। কারণ অনেক প্রবাসী ২০- ৩০ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে এসেও দেশে তার প্রাপ্য সম্মানটুকুই পান না। নিজের সর্বস্ব দেশে পাঠিয়ে দিয়ে দেশে এসে পকেট খরচ এর অর্থটাও পায় না। পরিবারকে সব দিয়ে নিজে নিঃস্ব হয়। তাই তাদের সম্মান বাড়লে এবং দেশে এসে মর্যাদার নিশ্চয়তা পেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ যেমন বাড়বে তেমনি দেশটাও এগিয়ে যাবে। দেশটা এগিয়ে যাক এটাই আমাদের প্রত্যাশা ।

মোঃ শরীফুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, নিমসার শাখা, কুমিল্লা।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page